আমি ও অপরিপক্ব গণনা

সিএনজি'র পেছনের সিটের পাশ ঘেঁষে বসে আছি। প্রচন্ড বেগে বাতাসে ঠান্ডা বইছে। হাত পা হিম শীতল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। মনে অদ্ভুত এক হিসাব ঘোরপাক করছে। হিসাবটা এরকম- ২৩ বছর বয়সী একজন যুবককে চাচ্ছি তেত্রিশ বছরে উন্নীত করতে। কেন চাচ্ছি জানিনা, মনে হচ্ছে করাটা দরকার। আবার ভয়ও হচ্ছে অনেক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তেত্রিশ বছরে কিছু পাননি দেখেই তো ‘কেউ কথা রাখেনি’ কবিতায় অপূর্ণতা তুলে ধরেছেন। বরুনার দেওয়া সুগন্ধের বদলে সুনীল রক্ত মাংসের গন্ধ পেয়েছিলেন। এই গন্ধটা নিখাঁদ ছিল না। তারপরও তেত্রিশটা যে খুব দরকার।
.
সময়টা এখন পালা বদলের। মাঝে মধ্য মনে হয় কবি হয়ে গেলে ভালো হতো। কবিরা তো দন্ডিত অপুরুষ। আমিও দন্ডিত অপুরুষ হতে চাই। কিন্তু জীবনের হিসাবটা মেলাতে পারছি না। ইদানিং পরদেশী রমনীরা এখানে এসে নবীগঞ্জের রকিবদের বিয়ে করছে। আমি নিতান্ত অবাক হচ্ছি অহরহ। এই রকিবরা কি সেওমার মত পরদেশীদের কেন চাচ্ছে? অর্থের স্বার্থ নাকি সুনীলের গন্ধে বিমোহিত, কে জানে? পরদেশী মেয়েদের আমি রমনী বলিই বা কেন? রকিবরা তো তেত্রিশে আসেনি, তেত্রিশ বুঝেনি।
.
জীবনের হিসাবটা মেলাতে পারলাম না। না তেইশের, না তেত্রিশের। নিজের ২৩ তম জন্মদিন চলে যাচ্ছে আর আমি তেত্রিশ নিয়ে মগ্নে আছি। এই প্রথম ইচ্ছা করেই জন্মদিনটা হাইড রেখেছি । ফেসবুকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় জন্ম তারিখে প্রাইবেসি দিয়েছি। কারনটা অজানা। ঘন্টা দুয়েক পর জন্মদিনটা বাসি হয়ে যাবে। নতুন বছরের হিসাব আবার শুরু হবে। তেত্রিশ আসবে ঠিকই কিন্তু হিসাবে আমি অপরিপক্ক থেকে যাবো আজকের মত।
.
মিজানুর রহমান
৩০.০১.২০১৭

No comments:

Post a Comment